Breaking News

মাতা-পিতার অধিকার পালনে সন্তানের জন্য কি কি করা বাঞ্ছনীয় জেনে নিন


আমাদের এ পৃথিবী অসংখ্য নিয়ামত এ পরিপূর্ণ। আর মহান আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত এর মধ্যে যে কোন ব্যক্তির জন্য সবচেয়ে উত্তম নেয়ামত হচ্ছে পিতামাতা। তাদের মাধ্যমেই আমাদের এই পৃথিবীতে পদার্পণ। যার জন্য সদ্ব্যবহার প্রদর্শনের ক্ষেত্রে আল্লাহর পরেই পিতা মাতার স্থান এবং তাদের সন্তুষ্টিতেই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি।


পিতা মাতার অধিকার সম্পর্কিত বিস্তারিত বর্ণনাঃ পিতামাতা জীবিত থাকাকালে যেমন তাদের জন্য সন্তানের অনেক কিছু করণীয় থাকে, তেমনি তাদের মৃত্যুর পর সন্তানের পক্ষ থেকে অনেক করণীয় থেকে যায়। তাই পিতা মাতার হক কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
১। পিতা মাতা জীবিত অবস্থায় অধিকার।
২। পিতা মাতার মৃত্যুর পরের অধিকার।

১। পিতামাতা জীবিত অবস্থায় অধিকারঃ  পিতা-মাতার জীবদ্দশায় সন্তানের জন্য কতিপয় করণীয় কাজ রয়েছে। যেমন--

সৌজন্যে মূলক আচরণ করাঃ মহান আল্লাহর এবাদত এর পরেই পিতা মাতার প্রতি সদ্য ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই সর্বদা তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরন করাটা বাঞ্ছনীয়।

সাহায্যের হাত প্রসারিত করাঃ পিতা-মাতার অসহায়ত্বের সময় তাদের প্রতি সাহায্যের হাত প্রসারিত করা সন্তানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।তাই সবকিছুর আগে পিতামাতার দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে।

পিতা মাতার অবাধ্য না হওয়াঃ আল্লাহতালা পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া এবং তাদের সাথে নাফরমানী করাকে হারাম সাব্যস্ত করেছেন।তাই কখনোই তাদের অবাধ্য হওয়া যাবেনা।

পিতা মাতাকে গালি না দেওয়াঃ পিতা মাতাকে গালি দেয়া এক জঘন্যতম অপরাধ এবং এটা কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত তাই পিতা মাতাকে গালি দেওয়া তো দূরের কথা কোনদিন তাদের ক্ষেত্রে উফ শব্দটিও বলা যাবেনা।

ভরণপোষণ করানোঃ  পিতা-মাতা অভাবগ্রস্ত এবং সন্তান আর্থিক স্বাচ্ছন্দ এর অধিকারী হলে সন্তান যা কিছু করবে তাতে পিতা মাতার অধিকার আগে। হাদিসে এসেছে, আন্তা অয়া মালুকা লি আবিকা।

মাতা পিতার আনুগত্য করাঃ ইসলামের নিয়ম নীতি অনুযায়ী সব সময় পিতা মাতার প্রতি আনুগত্য এবং তাদের খেদমত করতে হবে। যেহেতু মাতা পিতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি সেহেতু পিতা মাতা কে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করা এবং তাদের প্রতি সদয় হওয়া সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য।


স্ত্রীর উপর পিতা মাতাকে প্রাধান্য দেয়াঃ বিংশ শতাব্দীর শেষলগ্নে নব্য জাহেলিয়াতের জুগে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে স্ত্রীদের অশুভ উপদ্রব। অনেকাংশে স্বামীর উপর তাদের প্রভুত্ব পিতামাতার জীবনকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। এক শ্রেণীর স্বামী নামক নরপশুর আস্কারা পেয়েই স্ত্রীরা শ্বশুর শাশুড়ির প্রতি অবিচার করে। তাই কখনোই স্ত্রীকে পিতা মাতার উপর প্রাধান্য দেয়া যাবে না।

বার্ধক্যে যত্ন নেয়াঃ পিতা মাতার প্রতি সন্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হলো সেবা পাওয়ার অধিকার। বিশেষ করে তাদের বার্ধক্যে।  আর এজন্য বার্ধক্যে তাদের অনুমতি ব্যতীত জেহাদে যোগদান করা নাজায়েজ। এটা তখন যখন তারা সেবার খুবই মুখাপেক্ষী নন।

২। পিতা মাতার মৃত্যুর পরের অধিকার।  সন্তানের প্রতি মাতা পিতার অধিকার ছাড়াও এমন কতিপয় অধিকার নিয়োজিত রয়েছে যেগুলো সাধারণত তাদের মৃত্যুর পর পালনীয়।যেমন-


দাফন কাফনের ব্যবস্থা করাঃ পিতা মাতার মৃত্যুর পর সুন্নাত নিয়মে তাদের জানাজা ও দাফন কাফনের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব তাদের সন্তানদের। পিতা-মাতা কোন সম্পত্তি না রেখে গেলে ও সন্তানদের উচিত নিজেদের অর্থ ব্যয় করে তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা।

অসিয়ত পূরণ করাঃ পিতা মাতার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের থেকে সন্তান তাদের অসিয়ত পূরণ করবে। অন্যথায় সঙ্গতি থাকলে নিজের সম্পদ থেকেই পূরণ করা সন্তানের দায়িত্ব।

পিতা মাতার জন্য দোয়া করাঃ পিতা-মাতার রূহের মাগফিরাতের জন্য দু'আ করা সন্তানের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা তাদের জন্য নির্মিত নিম্নোক্ত দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন,
"রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা'" 

পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাঃ সন্তানের প্রতি পিতা মাতার মৃত্যুর পর পালনীয় কর্তব্য এর মধ্যে অন্যতম হলো পরলোকগত পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।যা দীনি হকের আওতাভুক্ত।

তাই আমাদের সকলের  পিতা মাতার অধিকার গুলো যথাযথভাবে আদায় করা উচিত।

No comments