Breaking News

মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের ভয়ংকর পরিণতি



কোন একদিন রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম মদিনার কবরস্থানে গেলেন। তিনি অনেকগুলো কবর দেখলেন। শেষমেষ একটা কবরের সামনে এলেন। রাসুল সঃ এর চেহারা মোবারকে ঘাম দেখা দিল।

এমতাবস্থায় তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। দুশ্চিন্তায় তার চেহারা কালো হয়ে উঠল।
হয়রান ও পেরেশান হয়ে গেলেন তিনি। একজন সাহাবী উনার অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করলেন,

হে আল্লাহর রাসূল, আপনি এত পেরেশান কেন?
তিনি অস্থির হয়ে বললেন, হায় হায়,এই কবরের বাসিন্দার উপর ভয়ানক আযাব হচ্ছে।
এমন ভয়ানক শাস্তি যা কল্পনা করা যায় না।

 আহা এই ব্যক্তির কি উপায়?

এই বলে তিনি কবরের পাশে তার হাত মুবারক রেখে দোয়া করলেন।

কিন্তু তার চেহারায় প্রশান্তি এলো না।

তিনি বললেন, আল্লাহর দরবারে দোয়া কিছুতেই কবুল হচ্ছে না। হয়তো সাংঘাতিক কোন বড় পাপ করেছে সে।যার ফলে তার এই নিদারুন শাস্তি হচ্ছে।

তিনি আর স্বস্থির থাকতে পারলেন না। তার অস্থিরতা যেন বেড়েই চলছে।

তিনি বলেন, আমার উম্মতের উপর এমন কঠিন শাস্তি হচ্ছে। আর আমি বাড়িতে গিয়ে কিভাবে শান্তিতে থাকবো?

তিনি তাঁর এক সাহাবীকে ডেকে বললেন, মদিনার বাজারের এখনি যাও। সেখানে গিয়ে উচ্চস্বরে আওয়াজ দিয়ে আহ্বান করো যাদের আত্মীয় এর কবর আছে এখানে।

তারা এলেন এবং তাদের নিজ নিজ আত্মীয় এর  কবরের পাশে দাঁড়িয়ে গেলেন।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ওই কবরে পাশে কেউ দাঁড়ালো ন।


বেদনায় নীল হয়ে গেলেন রাসূলে করীম বৃদ্ধা।
কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। খানিক পর এক বুড়ি লাঠিতে ভর দিয়ে সেখানে এল। এসে সেই কবরের পাশে দাঁড়ালো। তখন হুজুর পাক  সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম  স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেললেন।



তারপর বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলেন,

এটা কার কবর?
বৃদ্ধা বলেন আমার ছেলের।

নবী করিম  সঃ বলেন, হে বৃদ্ধা মা,
আপনার ছেলের কবরে ভয়ানক শাস্তি হচ্ছে।
বৃদ্ধা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, এটা কি সত্যিই?

শুনে আমি খুব খুশি হলাম।

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বললেন আল্লাহ মাফ করুন। একি বললেন মা, সে আপনার সন্তান।


বৃদ্ধা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল শুনুন তাহলে,
এই বাচ্চা যখন আমার গর্ভে তখন তার বাবা মারা যায়। সে পৃথিবীর মুখ দেখল। আমি ছাড়া তাঁর কেউ ছিল... আমি দিনের পর দিন নিদারুণ কষ্ট সহ্য করে তিল তিল করে তাকে বড় করলাম।

একদিন সে বিয়ে করল। স্ত্রীকে পেয়ে সে  ভুলে গেল আমাকে। ভুলে গেল অতীতের সবকিছু। একদিন তার আদরের বউ তার কানে কানে কি যেন বললো। ছেলে রেগে গিয়ে তুমুলভাবে মারতে শুরু করল আমাকে। ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল আমার সারা শরীর। জ্ঞান হারাল আমার।

অনেকক্ষণ পর   হুশ ফিরলে আমি আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলাম দুই হাত তুলে,
বললাম হে মাবুদ, তাকে কবরের শাস্তি দিও অনন্তকাল ধরে। দুনিয়াতে দিও না। চোখের সামনে ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারবো না আমি।


হে আল্লাহর রাসূল, শুনে খুব খুশি হলাম যে আল্লাহ তায়ালা আমার দোয়া কবুল করেছেন।

এই কথা শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলেন না রাসুল সঃ । তার অশ্রু গাল বেয়ে ফোটায় ফোটায় পড়তে লাগলো। খানিকক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন,

হে বৃদ্ধা মা, তুমি তোমার ছেলেকে ক্ষমা করো। সে ভয়াবহ শাস্তি পাচ্ছে।

বৃদ্ধা বললেন, হে রাসুল,
আপনি অন্য কিছু বলুন ছেলেকে আমি কিছুতেই ক্ষমা করবো না।

রাসুল সঃ নিরুপায় হয়ে আকাশের দিকে মুখ তুললেন। কাতর স্বরে বললেন হে মাবুদ, তুমি তাকে কবরের শাস্তি দেখাও। চোখের পলকে এই ঘটনা ঘটলো। বৃদ্ধার চোখ  সাথে সাথে বিস্ফোরিত চোখ।
সে প্রাণপণে চিৎকার করে বেহুশ হয়ে গেল।

অনেকক্ষণ পর বৃদ্ধার জ্ঞান ফিরল। থর থর করে কাঁপছেন তিনি।
তিনি বললেন হে খোদা, কবরের আযাব কি এমন ভীষণ? এমন ভয়ানক?
ছেলের পুরো শরীর থেকে চামড়া উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তাকে মুগুর পেটা করা হচ্ছে।


হে আল্লাহর রাসূল আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম। আপনি আল্লাহর নিকট দোয়া করুন যেন সে মুক্তি পায়...।
দোয়া শেষ হয়।
উনার চেহারা মোবারক উজ্জ্বল হয়ে গেল।
প্রকৃতিতে,আকাশে, বাতাসে  নেমে এলো যেন সুমহান সমাহিত পরিবেশ। চারদিকে যেন শান্তির ছায়া নেমে  এলো..............।



এই গল্প থেকে আমাদের  শিক্ষা নেয়া উচিত যে, মায়ের সাথে আমরা যেন কখনোই কোনো কারণে খারাপ আচরণ না করি। সে যত ছোটখাটো বিষয়ই হোক না কেন'। 
                                                                                  ''কেননা মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত''

                                                                                                                                    ধন্যবাদ'''

No comments