Breaking News

ইসলামের দৃষ্টিতে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর সেরা ৫টি কৌশল!


জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে স্মৃতিশক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা ইসলামকে সামান্য হলেও মেনে চলার চেষ্টা করি তাদের অনেকেরই ইচ্ছা থাকে নতুন নতুন দু’আ, কুরআনের আয়াত ও সূরা মুখস্থ করার। সেটা হয়তো অনেকে চেষ্ঠা করছি আবার অনেকে করেছি। কেউবা আবার ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়েও দিয়েছি।  কোনকিছু মুখস্ত করতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনের একটি অন্যতম কারণ হলো এটা মনে করা যে, আ
মাদের স্মৃতিশক্তি কমে গিয়েছে। তাহলে এই স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায় কী? আসুন এ ব্যাপারে জেনে নেই কিছু উপায় বা কৌশল।

বয়সের সাথে সাথে আমাদের চিন্তাশক্তি, স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। বিজ্ঞানীরা আমাদের স্মৃতিকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করেছেনঃ ১. স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিশক্তি  ২. দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি ।

খুব অল্প বা সাময়িক সময়ের জন্য আমাদের মস্তিষ্ক যে সব স্মৃতি স্থায়ী থাকে সেগুলো হচ্ছে স্বল্পস্থায়ী স্মৃতি। আর দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাদের মস্তিষ্ক যেসব স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে সেগুলো হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি। আজকের আলোচনায় আমরা কিভাবে  দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর যায় এই বিষয়ে কিছু কৌশল জানবো। 

দু’আ ও যিকর করা: আমরা জানি মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের উচিত সর্বদা আল্লাহর কাছে দু’আ করা যাতে তিনি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন এবং কল্যাণকর জ্ঞান দান করেন। এক্ষেত্রে আমরা নিন্মোক্ত দু’আটি পাঠ করতে পারি,

“হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।” [সূরা ত্বা-হাঃ ১১৪]
তাছাড়া যিকর বা আল্লাহর স্মরণও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। 
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,
“…যখন ভুলে যান, তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন…” [সূরা আল-কাহ্‌ফঃ ২৪]
তাই আমাদের উচিত যিকর, তাসবীহ (সুবহান আল্লাহ), তাহমীদ (আলহামদুলিল্লাহ), তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) – এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আল্লাহকে স্মরণ করা।

ইখলাস বা আন্তরিকতা: পরিপূর্ণ ইখলাস (اخلاص) অর্থ্যাৎ জ্ঞানর্জনের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র আল্লাহ্’র সন্তুষ্টি লাভের জন্য নির্ধারণ করা। দুনিয়াবী কোন মোহ্ কিংবা জাহির করা যেনো একে কলুষিত না করে; তা নিশ্চিত করা এবং প্রতিনিয়ত নিজের নিষ্ঠাকে প্রশ্ন করা।

বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করা: একটু বিষেষভাবে লক্ষ্য করলে আমরা দেখবো যে, আমাদের একেক জনের মুখস্থ করার পদ্ধতি একেক রকম। যেমন, কারো শুয়ে শুয়ে পড়লে পড়া তারাতারি মুখস্থ হয় আবার হেঁটে হেঁটে পড়লে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়। কেউ নীরবে পড়তে ভালোবাসে, কেউবা আবার আওয়াজ করে পড়ে। কারো ক্ষেত্রে ভোরে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়, কেউবা আবার গভীর রাতে ভালো মুখস্থ করতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ উপযুক্ত সময় ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ঠিক করে তার যথাযথ ব্যবহার করা।

নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবারঃ  বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে ব্যায়াম এর মাধ্যেমে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে থাকে। আপনি যতবার ব্যায়াম করবেন, ততবার আপনার মস্তিষ্কে একটি করে নতুন কোষ তৈরি হয়ে থাকে। ব্যায়াম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির সবচেয়ে সহজ এবং ভাল উপায়। আমাদের শরীরের যেমন জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে,তেমনি ব্রেনেরও জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে। আমরা সবাই জানি ভালো ফল, শাকসবজি, মাছ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ফল, শাকসবজির সাথে ওমেগা থ্রি সমৃদ্ধ খাবার, বাদাম, বিনস, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়োর বীচি, সামুদ্রিক মাছ, রঙিন ফল, গ্রীণ টি ইত্যাদি খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে।

পরিমিত পরিমাণে বিশ্রাম নেয়া: আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের মস্তিষ্ক অনেকটা ব্যস্ত অফিসের মতো কাজ করে। এটি তখন সারাদিনের সংগৃহীত তথ্যসমূহ প্রক্রিয়াজাত করে। তাছাড়া ঘুম মস্তিষ্ক কোষের পুণর্গঠন ও ক্লান্তি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে দুপুরে সামান্য ভাতঘুম আমাদের মন-মেজাজ ও অনুভূতিকে চাঙা রাখে। এটি একটি সুন্নাহও বটে। আর অতিরিক্ত ঘুমের কুফল সম্পর্কে তো আগেই বলা হয়েছে। তাই আমাদের উচিত রাত জেগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাওয়াহ বিতরণ না করে নিজের মস্তিষ্ককে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া। এতে করে আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য হবে। 

এই ৫টি কৌশল মেনে চললে আমাদের স্মৃতিশক্তি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ।

No comments